কক্সবাংলা রিপোর্ট :: ২০২২ সালে কক্সবাজার জেলায় আমন ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় সকল ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। তবে বাম্পার ফলন না হলেও এবার জেলার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৩ হাজার ৬৯০মেট্রিক টন বেশি উৎপাদন হয়েছে।
জেলায় সবচেয়ে বেশি ফলন হয়েছে চকরিয়া উপজেলায়। এরপর যথাক্রমে টেকনাফ,রামু,উখিয়া,পেকুয়া ও মহেশখালীতে আমনের ভালো ফলন হয়েছে।
ইতিমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় কৃষকেরা নতুন ধান কেটে গোলায় তুলছেন। তবে বেশি ফলনেও ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা কাটছে না কৃষকদের। আর আমনের এমন ভালো ফলনে খুশি জেলার কৃষি কর্মকর্তারা।
কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,এ বছর আমন চাষের শুরুতে অনাবৃষ্টি,খরা ও নানা বৈরী আবহাওয়া মোকাবিলা করতে হয়েছে। তবে এসব সাময়িক সমস্যা কাটিয়ে ধানের ভালো ফলন হয়েছে। এবার হেক্টরপ্রতি ২.৯৯ মেট্রিক টন ধান পাওয়া গেছে।
জেলায় এ বছর রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৮ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমি। কিন্তু অর্জন হয়েছে ৭৮ হাজার ৮৪৫ হেক্টর জমিতে।
এ বছর হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের ধান মিলে জেলায় চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৩২ হাজার ৩৫০মেট্রিক টন। হেক্টরপ্রতি ৩ মেট্রিক টন হিসেবে জেলায় ২ লাখ ৩৬ হাজার ৪০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়েছে।
এর মধ্যে সর্বাধিক উৎপাদন হয়েছে চকরিয়া উপজেলায় ৬৪ হাজার ৭২৫ মেট্রিক টন, দ্বিতীয় সর্বাধিক উৎপাদন হয়েছে টেকনাফ উপজেলায় ৩১ হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন।
এরপর রামু উপজেলায় ২৮ হাজার ৩৬২ মেট্রিক টন, উখিয়া উপজেলায় ২৭ হাজার ৮৩৩ মেট্রিক টন, পেকুয়া উপজেলায় ২৫ হাজার ১১৯ মেট্রিক টন,মহেশখালী উপজেলায় ২৩ হাজার ৯২৫ মেট্রিক টন, সদর উপজেলায় ২২ হাজার ৭৩৯ মেট্রিক টন এবং কুতুবদিয়া উপজেলায় ১১ হাজার ৫০২ মেট্রিক টন।
কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী অফিসার আশীষ দে কক্সবাংলাকে বলেছেন, কৃষকরা যদি ধানের ন্যায্যমূল্য পায় তবে ধানের উৎপাদন প্রতি বছর এভাবেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
তবে চাষিরা বলছেন, আমন ধানের ফলন তুলনামূলক ভালো হয়েছে তবে ন্যায্যমূল্য নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তারা। ফলনে হাসি ফুটলেও গত বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতার কারণে এ বছরও ধানের মূল্য নিয়ে শঙ্কিত তারা। তাদের দাবি, ধানের সঠিক দাম পেতে এখন থেকেই সরকারি তৎপরতা প্রয়োজন। ইতোমধ্যেই বাজারে যারা আমন ধান বিক্রি করতে নিয়েছেন তারা ভালোই দাম পেয়েছেন। সরকার নিজের জন্য আমন ধান ও চাল কেনার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন, সে কারণেই এবার আমনের ভালো দাম পাবেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো: কবির হোসেন কক্সবাংলাকে জানিয়েছেন, কৃষকের আগ্রহ, সরকারের নজরদারি, পৃষ্ঠপোষকতা এবং সরকারের দেওয়া ভর্তুকিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ফলেই এবার আমনের ভালো ফলন হয়েছে।তিনি জানান,জেলায় আমন ধান চাষাবাদ যখন শুরু হয়, তখন বৃষ্টিপাত কম হলেও তেমন কোন সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। যারফলে চাষিদের আমন ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি। এছাড়াও আমন চাষিদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার জন্য আমাদের দপ্তরের সকল কর্মকর্তা/কর্মচারী সব-সময় তৎপর ছিলেন। ধানের বাম্পার ফলনের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করি, সেই সুফলও পেয়েছি। তিনি আশা করছেন, আমনের পর নতুন বছরে বোরোর উৎপাদনও ভালো হবে।
Posted ১:২৯ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২২
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta